Advanced search options
"বাদামী হায়নার কবলে"

গল্পের লেখক আর তার সৃষ্ট চরিত্র যখন লেখককেই প্রশ্ন করে করে বসে - "এই খাজা সংলাপ আমি বলবো না" , বা "আপনি কি ভেবে এটা লিখলেন বলুনতো অ্যা, সারা জীবনের মতো আমাকে হাসির খোরাক করে দিলেন" ; ট্রেলার থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল ব্যাপারটা যে কি হতে চলেছে সিনেমাটা। "ইন্দুবালা ভাতের হোটেল", "ড্রাকুলা স্যার", "মন্টু পাইলট", আর এই বার " বাদামী হায়নার কবলে" । পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য্য বরাবরই একটু ভিন্নধর্মী কাজের জন্য চর্চিত হয়ে থাকেন, আর এই বারেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। ৫০ - ৬০ দশকের বিতর্কিত শ্রী স্বপনকুমারের গোয়েন্দা চরিত্র দীপক চ্যাটার্জী-কে "বাদামী হায়নার কবলে" সিনেমার মাধ্যমে আবার ফেরৎ নিয়ে এসেছেন পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য্য।
আবীর চট্টোপাধ্যায়, পরাণ বন্দোপাধ্যায়, শ্রুতি দাস, প্রতিক দত্ত, শাওলি চট্টোপাধ্যায় আর গৌতম হালদার প্রত্যেকের অভিনয় বেশ ভালো। হারিয়ে যাওয়া ডিটেকটিভ, বিস্মৃত হয়ে যাওয়া এক রাইটার আর অদ্ভুত এক পৃথিবীর গল্প " বাদামী হায়নার কবলে " । "বাদামী হায়নার কবলে" কোনো উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা নয় বরং বলা যেতে পারে কাল্পনিক চরিত্রগুলো আজকের সমাজের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। এই সিনেমার সংলাপ একটি ধারালো অস্ত্র, যা কখন আপনাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেবে আপনি বুঝতেও পারবেন না। ব্যঙ্গ করে বলা ডায়ালগগুলো কখন আপনাকে হাসাবে আর কখন আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সিনেমাটোগ্রাফি আর সাথে আলোর খেলা এই ছবির অন্যতম আকর্ষণ । অনেকদিন পর কোনো বাংলা ছবিতে প্রাকৃতিক আলো আর নিয়নের আলোর এই খেলা বেশ উপভোগ্য।সর্বোপরি আবহ সঙ্গীত, আর গান এক অন্যমাত্রা এনে দেয় এই সিনেমাকে। যারা সত্যিই একটু অন্য ধারার ছবি হজম করতে পারেন এই সিনেমা তাদের জন্য একদম "গন্ধরাজ মোমো" না খেলে মজা বুঝবেন না। তাই পারলে একবার দেখে আসুন বাদামী হায়নার কবলে। নয়তো বা নিন্দুকের কথায় "নাচো, নাচা প্র্যাকটিস করো"।