Advanced search options

Or


Any Questions? 8481800413

দর্পণ শারদ সম্মান ২০২৪

দর্পণ শারদ সম্মান ২০২৪ 'বিচারকের বিচারে' বিভাগে পুরস্কৃত হলেন বেলিয়াঘাটা ৩৩ নং পল্লীবাসী বৃন্দ দুর্গোৎসব কমিটি। ২৪ তম বর্ষে তাদের এ বছরের ভাবনা কোহিনুর - অতীতের দিকে যাত্রা। যে প্রদীপ যত আলো ছড়ায়, তার নীচে নাকি তত বেশি অন্ধকার জমাট বাঁধে। যে হীরক খন্ডের নাম কোহ ই নুর বা আলোর পর্বত তাকে ঘিরে যে অনেক অন্ধকার জমবেই তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যাকে 'অভিশপ্ত হীরক' বলেও অপবাদ দেওয়া হয়েছে। এই কোহিনুর বার বার পার করেছে দেশ, মহাদেশ, সাম্রাজ্য আর ধর্মের সীমানা। বার বার বদলে গেছে তার অধীশ্বরের নাম। কথিত আছে কাকাতিয়া সাম্রাজ্যের এক হিন্দু দেবীর মন্দিরে দেবী মূর্তির ত্রিনয়ন থেকে এই হীরে প্রথমবার হরণ করেন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজী। এরপর বহু হাত ঘুরে কোহিনুর এসে পৌঁছায় মোগল সম্রাট বাবরের হাতে। তার নাম হয় বাবর কা হীরা। এরপর বাবর পুত্র হুমায়ুনের হাত ধরেই এই হীরা যাত্রা করে পারস্য দেশের উদ্দেশ্যে ও অনেক যুগ পরে তা ফিরে আসে ভারত উপমহাদেশের দাক্ষিণাত্য অঞ্চলে। এরপর ১৭৪৮ সালে মীর জুমলা নামে একজন বণিকের হাত ধরে এই হীরা ফিরে আসে মোগল সম্রাট শাহজাহানের কাছে যা পরে শাহজাহানের ময়ূর সিংহাসনে স্থান করে নেয়। বহুকাল পরে নাদির শাহ দিল্লি থেকে এই হীরা হরণ করে নিয়ে যান পারস্য দেশে। নাদির শাহ ই এর নাম দেন কোহ ই নুর বা আলোর পর্বত। এরপর কাশ্মীরের পথ ধরে এই অভিশপ্ত হীরা এসে পৌঁছায় পাঞ্জাবের রঞ্জিত সিং এর কাছে। পরে এই কোহিনুর হীরা বড়লাট লর্ড ডালহৌসি তঞ্চকতা করে পাঞ্জাবের নাবালক রাজা দিলীপ সিং এর কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে। ব্রিটিশ জাহাজে চেপে কোহিনুর যাত্রা করে লন্ডনে ও সেখানে কোহিনুর কে কেটে বাড়িয়ে তোলা হয় তার ঔজ্জ্বল্য। কমে যায় তার আয়তন। মহারানী ভিক্টোরিয়া ও পরবর্তীকালে মহারানী এলিজাবেথের মুকুটে স্থান পাওয়া এই কোহিনুর আজও টাওয়ার অফ লন্ডনের শোভা বর্ধন করে চলেছে। আশা করা যায় ভারতবর্ষ থেকে যাত্রা শুরু করা এই হিরক খণ্ড একদিন আবার তার উৎস ভূমিতেই ফিরে আসবে। সম্পূর্ণ হবে তার বৃত্তাকার পথ। কোহিনুরের এই দীর্ঘ ঐতিহাসিক যাত্রা পথের সাক্ষী হচ্ছে এ বছরের বেলিয়াঘাটা ৩৩ নং পল্লীবাসী বৃন্দের দর্শকরা।